নিভৃতচারী আল্লাহওয়ালাদের খোঁজে ৩
নিভৃতচারী আল্লাহওয়ালাদের খোঁজে ৩
কথা প্রসংগে হজরত শুনালেন কিছু হৃদয়গ্রাহী কারগুজারী। আপনারা সেগুলো হজরতের জবানেই শুনুন।
” একবার পটিয়ার শাহমীরপুরে তিনদিনের জামাত নিয়ে গেলাম। মসজিদে ঢুকার অনুমতি মিললো না। আমরা মসজিদের বাইরে বিছানা রাখলাম।
শাহমীরপুর বাজারে এলান হয়েছে আমাদের কাছে যেন কেউ কোন কিছু বিক্রি না করে। ফলে রান্নার জন্য কিছুই কেনা গেলো না। আমরা নিজেদের সাথে চাল নিয়ে গিয়েছিলাম। এরশাদ ভাই ( ইনি সেই এরশাদ ভাই যিনি মাওলানা ইনায়মুল হাসান রহঃ এর সাথে প্রতিযোগিতা করতেন, কে আগে হজরতজী ইউসুফ রহঃ এর জন্য পান রেডি করবেন, চট্টগ্রামে তাবলীগের ইতিহাসে এক কিংবদন্তী ছিলেন তিনি) মসজিদের আঙিনায় দস্তরখান বিছালেন। প্লেটে শুধু সাদা ভাত। আম গাছ থেকে পাতাসহ কিছু ডাল ছিঁড়ে ধুয়ে দস্তরখানে রাখলেন। আমরা আমপাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে ভাত দিয়ে খেতে লাগলাম। কি বলবো! এখনও যেন জিহ্বায় লেগে রয়েছে সেই খাবারের স্বাদ।
আর একবার চিল্লার জামাতে আমরা কাঁচামরিচ দিয়ে লাউ পাকালাম। আমাদের রান্নার সুগন্ধ পুরো পাড়া ছড়িয়ে পড়লো। এলাকার লোকজন ভিড় করতে লাগলো। এই সামান্য তরকারীর এমন সুগন্ধে তারা হতবাক। বললো, আপনাদের তরকারিটা আমাদের দিয়ে দেন। আপনাদের জন্য আমরা ব্যবস্থা করবো। আমাদের তরকারির বরকত তারা নিতে চাইলো। এক লাউয়ের সুগন্ধই তাদের প্রভাবিত করলো। দাওয়াতের কাজের আজমত তাদের অন্তরে আসন নিয়ে নিলো।
হজরত বললেন, আজ তো আমরা বিরিয়ানী পাকিয়ে মানুষ জমা করতে চাই। বিরিয়ানী খাইয়ে তাবলীগে লাগাতে চাই। কিন্তু লাউয়ের ছড়িয়ে পড়া সেই সুগন্ধের মুকাবিলায় রসনাপূজারী বিরিয়ানী কতটুকু কার্যকরী হবে। আজ সাথীরা গাশতের চেয়েও জড়ো করে বিরিয়ানী খাওয়ানোকে বেশি গুরুত্ব দেয়। আগের সেই মুজাহাদা কোথায় হারিয়ে গেলো!”